সফল মার্কেটিং কন্টেন্টের মূল দুই অস্ত্র যা জানতেই হবে

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে চাইলে এই ভুলগুলো করবেন না!

ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাইছেন? সফল হতে হলে কিছু সাধারণ ভুল এড়িয়ে চলা জরুরি। এই ব্লগে জানুন কোন ভুলগুলো আপনাকে পিছিয়ে দিতে পারে এবং কীভাবে সঠিক পথে এগিয়ে যাবেন।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হতে চাইলে এই ভুলগুলো করবেন না!

টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা এমনকি অনলাইনেও ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে সাবলম্বী হওয়ার গল্প হরহামেশাই চোখে পড়ে। বিশেষ করে ‘ঘরে বসে আয়’, ‘অনলাইনে আয়’ বা ‘ফ্রিল্যান্সিংয়ে লাখ টাকা আয়’ এই হেডলাইনগুলোর কারণে ফ্রিল্যান্সিংয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। মনে প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক, ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিংয়ে এত টাকা আয় কি আসলেই সম্ভব?

 

হ্যাঁ অবশ্যই সম্ভব, এমনকি এর চেয়েও বেশি আয় সম্ভব,’ কিন্তু তার আগে আপনাকে দক্ষ হতে হবে এবং ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতা পেতে একজন ব্যক্তিকে ডেডিকেশন বা পরিশ্রমের উপর ভিত্তি করে তিন মাস, ছয় মাস বা ১-২ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং না ফুলটাইম চাকরি?

ফ্রিল্যান্সিং- বাংলায় যাকে বলে মুক্ত পেশা। এটি ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারের মতো নির্দিষ্ট কোনো পেশা নয়; কাজ করার একটি মাধ্যম। যেমন ধরুণ, আপনি একজন গ্রাফিক ডিজাইনার, একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে ফুলটাইম চাকরি করছেন, বা অনলাইনে কোনো মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সিং করছেন। এই দুই ক্ষেত্রেই আপনার পরিচয় কিন্তু গ্রাফিক ডিজাইনারই থাকছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনার কাজের জায়গাটা পরিবর্তন হচ্ছে।

 

ফ্রিল্যান্সাররা অন্যান্য ফুলটাইম চাকুরিজীবীদের চাইতে বেশ কিছু ক্ষেত্রেই বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকেন। ফ্রিল্যান্সাররা তাদের পছন্দ অনুযায়ী কাজ বেছে নিতে পারেন এবং সেই কাজের জন্য নিজেই মূল্য নির্ধারণ করতে পারেন। পাশাপাশি তাদের কাজ করার জন্য কোনো ধরাবাঁধা সময় থাকে না।

ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কিভাবে শুরু করবেন

 

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার মূলশর্ত : দক্ষতা অর্জন

অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ফ্রিল্যান্সিং-এর জন্য অসংখ্য কাজ আছে। ডাটা এন্ট্রি, গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং, লোগো ডিজাইন, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন, গেম ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, এসইও, জাভাস্ক্রিপ্ট, সিএসএস, এইচটিএমএল, পিএইচপি, অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট, ব্লকচেইন, প্রজেক্ট ম্যানেজিং, কোডিংসহ আরো অনেক কাজ করার সুযোগ আছে।

ভেবে দেখুন, আপনি যেই কাজই করতে চান না কেন, আপনাকে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের সাথে। সেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে নিজেকে সেভাবেই গড়ে তুলতে হবে।

 

মার্কেটপ্লেসে কাজ পেতে যা যা করবেন

মার্কেটপ্লেসগুলো মূলত ক্লায়েন্ট বা গ্রাহকদের সাথে ফ্রিল্যান্সারদের যোগাযোগ স্থাপন করে। Fiverr, Upwork, Freelancer, Peopleperhour, Guruসহ আরো অনেক জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস আছে।

 

আপনি যে মার্কেটপ্লেসে কাজ করবেন, সেখানে সঠিক নাম, ঠিকানা, ইমেইল ইত্যাদি সাবমিট করে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। এরপর আপনাকে দারূণ সুন্দর আর গোছানো একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে, কারণ ক্লায়েন্ট সবার প্রথমে দেখবে আপনার প্রোফাইল। সেখানে যদি আপনার পেশাদারিত্বের নমুনা না পাওয়া যায়, ক্লায়েন্ট আকৃষ্ট হবে না।

 

প্রোফাইলে আপনার একটি প্রফেশনাল ছবি যুক্ত করবেন। চেষ্টা করবেন সেলফি বাদে হাসিমুখে ক্যামেরার দিকে তাকানো একটি ছবি যুক্ত করতে। প্রোফাইলের হেডিং লেখার সময় আপনার দক্ষতা এবং কাজের ধরন নিয়ে দুই বাক্যের মধ্যে গুছিয়ে লিখতে হবে। এরসাথে যুক্ত করতে হবে আপনার কাজের কিছু নমুনা বা পোর্টফোলিও। সেখানে ছোট করে আপনার আগে করা কাজের তথ্য এবং কিছু ছবি যুক্ত করবেন।

 

পোর্টফোলিও ভারী করতে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন যে কোয়ালিটির উপর ফোকাস দিবেন, নাকি কোয়ান্টিটি। ‘শুরুতে যখন আপনার কাজ খুব কম হবে, তখন আপনি কোয়ান্টিটিতে ফোকাস করতে পারেন,’ বলেন রহমান। কিন্তু যখন আপনার কাজ বাড়বে, তখন শুধু সেরা কাজগুলোই যুক্ত করবেন পোর্টফোলিওতে।

 

মার্কেটপ্লেসের নিয়মকানুন নিয়ে সতর্ক থাকবেন। না হলে, আপনি যতই পুরোনো ফ্রিল্যান্সার হোন না কেন, নিয়ম ভাঙলে আপনার একাউন্ট বাতিল করে দিতে পারে। একাউন্ট বাতিল হওয়াটা একেক মার্কেটপ্লেসে একেক কারণে হতে পারে। সেগুলো ছাড়াও রিফাত আহমেদ আরো কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছেন। তারমধ্যে আছে পেমেন্ট বাইরে চাওয়া, এক মার্কেটপ্লেসে আরেক মার্কেটপ্লেসের কথা বলা, টাকার জন্য ক্লায়েন্টকে খুব রিকোয়েস্ট করা আর অহেতুক ক্লায়েন্টকে মেসেজ করা।

 

নিয়মিত কাজ পেতে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি ক্লায়েন্ট

একজন ক্লায়েন্ট যেমন আউটসোর্সিংয়ের জন্য নির্ভরযোগ্য ফ্রিল্যান্সার খুঁজে, তেমনি একজন ফ্রিল্যান্সারের নিয়মিত আয়ের জন্য প্রয়োজন হয় দীর্ঘমেয়াদি ক্লায়েন্ট। দীর্ঘমেয়াদি ক্লায়েন্ট বাদে অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলো থেকে নিয়মিত আয় খুবই কঠিন।

তাই যখনই কোনো নতুন ক্লায়েন্ট আপনাকে কোনো কাজ দিবে, সবার আগে আপনি কাজটি ভালোভাবে বুঝেছেন কিনা সেটি দেখে নিবেন। কোনো প্রশ্ন থাকলে ক্লায়েন্টকে প্রশ্ন করে ক্লিয়ার হয়ে নিবেন। এই পুরো প্রক্রিয়াটিতে আপনাকে খুব প্রফেশনাল থাকতে হবে।

কাজের বাইরে অন্য কোনো বিষয়ে ক্লায়েন্টকে প্রশ্ন করা যাবে না। আপনাকে অবশ্যই কাজটি ডেডলাইনের আগে জমা দিতে হবে। যদি কোনো সমস্যার কারণে আপনি মনে হয় আপনি যথাসময়ে শেষ করতে পারবেন না তাহলে সেই বিষয়ে ক্লায়েন্টকে আগেই জানিয়ে রাখবেন।

 

শুরুতে ভুল হবেই, সবারই হয়

সময়ের ব্যবধান নিয়ে প্রথম দিকে অনেকেই বুঝে উঠতে পারে না। আপনি যে ক্লায়েন্ট থেকে কাজ নিবেন, সেই ক্লায়েন্টের দেশের সময় ধরে কাজ করতে হবে। যেমন রিফাত আহমেদের বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট যুক্তরাষ্ট্রের। তাই তিনি সেখানকার সময় অনুযায়ী কাজ করেন।

 

পেমেন্ট নিয়েও নতুনদের বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। আপওয়ার্কে কাজের দক্ষতা, কাজের সময়, পরিমাণ ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে পেমেন্ট ঠিক করা হয়। কিন্তু গিগভিত্তিক মার্কেটপ্লেসগুলোতে নিজের পারিশ্রমিক নিজেদের ঠিক করতে হয়। সেক্ষেত্রে, একই গিগ নিয়ে কাজ করা অন্যান্য ফ্রিল্যান্সারদের গিগের দাম দেখে ধারণা করতে হবে আপনি নিজের কাজের কেমন দর নির্ধারণ করবেন।

 

ক্লায়েন্টদের সাথে ইংরেজিতে কমিউনিকেশন করতে না পারাটা বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের সবচেয়ে কমন সমস্যা, জানান মারুফুর রহমান, ‘আপনি যদি ক্লায়েন্টের কথা বুঝতে না পারেন, তাহলে আপনার আউটপুট ক্লায়েন্টের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না।’

 

মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং অ্যাপ | ফ্রিল্যান্সিং কাজের অ্যাপ ডাউনলোড

সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *