মাত্র ২০ হাজার টাকা হাতে আছে? হতাশ না হয়ে জেনে নিন এমন ৫টি ছোট ব্যবসার কথা, যেগুলো ঘরে বসেই শুরু করে আপনি গড়তে পারেন নিজের সফলতার গল্প। আয় বাড়ানোর বাস্তবিক আইডিয়াগুলো এখনই জানুন!
উদ্যোক্তা হতে ইচ্ছাশক্তি ও পরিকল্পনাই মুখ্য, বড় অঙ্কের মূলধন নয়। যে কেউ যদি ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করার সক্ষমতা রাখেন এবং নিজের শ্রম ও নিষ্ঠা দিতে প্রস্তুত থাকেন, তাহলে এই ব্যবসাগুলোর যেকোনো একটিকে বেছে নিয়ে সাফল্যের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
🧺 ১. হোমমেড খাবার বা টিফিন সার্ভিস
আজকাল অনেক ব্যস্ত মানুষ আছেন যারা রান্নার সময় পান না—বিশেষ করে একক কর্মজীবী ও ছাত্রছাত্রীরা। তাদের জন্য ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবারের একটা বড় চাহিদা রয়েছে। আপনি যদি ভালো রান্না জানেন বা পরিবারের কেউ রান্নায় পারদর্শী হন, তাহলে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
প্রাথমিক খরচ:
কাঁচা বাজার: ৩-৫ হাজার টাকা
প্যাকেজিং সামগ্রী: ২ হাজার টাকা
হোম ডেলিভারি (লোকাল): ২-৩ হাজার টাকা
প্রমোশন (ফেসবুক পেজ, লিফলেট): ২ হাজার টাকা
লাভের সুযোগ:
প্রতিদিন ১০-১৫ টি খাবার বিক্রি করলেও মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
🧼 ২. হ্যান্ডমেইড সাবান বা বিউটি প্রোডাক্টস তৈরি
মানুষ এখন প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি প্রসাধনী বা সাবানের প্রতি আগ্রহী। ইউটিউব বা ফেসবুকে অনেক টিউটোরিয়াল দেখে শিখে ঘরেই তৈরি করতে পারেন এই পণ্যগুলো।
প্রাথমিক খরচ:
উপকরণ (গ্লিসারিন, এসেন্স, রঙ): ৫-৬ হাজার টাকা
প্যাকেজিং ও লেবেল ডিজাইন: ৩ হাজার টাকা
প্রমোশন (অনলাইন): ২ হাজার টাকা
প্রাথমিক ইনভেন্টরি: ৮-১০ হাজার টাকা
লাভের সুযোগ:
একেকটি সাবানের লাভ থাকে ২০-৩০% পর্যন্ত। প্রাথমিকভাবে ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে বিক্রি শুরু করা যেতে পারে।
ফেসবুক মার্কেটিং টিপস বাংলা: সফলতার জন্য সম্পূর্ণ গাইড (A to Z)
👕 ৩. প্রিন্টেড টি-শার্ট ব্যবসা (অনডিমান্ড)
নতুন প্রজন্মের মাঝে ইউনিক ডিজাইন বা কাস্টম প্রিন্টেড টি-শার্টের চাহিদা অনেক। আপনি ডিজাইন তৈরি করে স্থানীয় প্রিন্টিং হাউজের মাধ্যমে অর্ডার অনুযায়ী প্রিন্ট করিয়ে বিক্রি করতে পারেন।
প্রাথমিক খরচ:
কিছু নমুনা টি-শার্ট প্রিন্ট: ৫-৭ হাজার টাকা
ডিজাইন সফটওয়্যার বা ফ্রিল্যান্স ডিজাইনার ভাড়া: ২-৩ হাজার টাকা
অনলাইন পেজ খোলা ও প্রমোশন: ৩-৫ হাজার টাকা
প্যাকেজিং সামগ্রী: ২ হাজার টাকা
লাভের সুযোগ:
প্রতিটি টি-শার্টে ৮০-১৫০ টাকা পর্যন্ত লাভ করা সম্ভব।
📚 ৪. ক্ষুদ্র স্কিল বেইজড কোচিং/টিউশন সেন্টার
আপনি যদি ইংরেজি, গণিত, কম্পিউটার, বা গ্রাফিক ডিজাইনের মতো কোন বিষয়ে পারদর্শী হন, তাহলে ঘরে বসেই ছোট একটি কোচিং শুরু করতে পারেন।
প্রাথমিক খরচ:
চেয়ার, বোর্ড ইত্যাদি: ৫-৭ হাজার টাকা
কিছু প্রমোশনাল ব্যানার/লিফলেট: ২ হাজার টাকা
প্রাথমিক স্টেশনারি: ১ হাজার টাকা
লাভের সুযোগ:
মাসে ১০-১৫ জন ছাত্র থাকলে আয় হতে পারে ১০-২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
🧵 ৫. টেইলরিং বা অল্টারেশন সার্ভিস
সেলাই কাজ জানলে এই ব্যবসা খুবই লাভজনক। মহিলাদের পোশাক বা প্যান্ট-শার্ট ছোট-বড় করা, নতুন ডিজাইন তৈরি ইত্যাদির ভালো চাহিদা আছে।
প্রাথমিক খরচ:
সেলাই মেশিন (পুরাতন হলে): ৮-১০ হাজার টাকা
সুতলি, সুই, বোতাম ইত্যাদি: ২-৩ হাজার টাকা
প্রমোশন ও পরিচিতদের মাধ্যমে খবর ছড়ানো: ২ হাজার টাকা
লাভের সুযোগ:
প্রতিদিন ২-৩টি অর্ডার পেলেও মাসিক আয় ১০-১৫ হাজার টাকা হতে পারে।
লেখকের মত প্রকাশ
২০ হাজার টাকা খুব বড় পুঁজি না হলেও, সঠিক পরিকল্পনা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে এটাকে লাভজনক ব্যবসায় রূপান্তর করা সম্ভব। নিজের দক্ষতা, সময় এবং বাজারের চাহিদা বুঝে ছোট পরিসরে শুরু করলে ধীরে ধীরে তা বড় আকার ধারণ করতে পারে। সবকিছুর আগে দরকার আত্মবিশ্বাস আর সাহস — কারণ ছোট স্বপ্ন থেকেই বড় গল্পের শুরু হয়। 🌱